হাটহাজারী নিউজ ডেস্ক:
বিপিএল অষ্টম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সকে ৪ উইকটে হারিয়েছে ফরচুন বরিশালের।
শুক্রবার (২১ জানুয়ারী) মিরপুরে টস হেরে নড়বড়ে শুরু চট্টগ্রামের।
শেষ বিকেলে ম্যাচটি জমিয়ে তুলেছিলেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে শেষ পর্যন্ত তারকাবহুল সাকিবের বরিশালের বিপক্ষে জিততে পারল না তারা। হেরে গেছে ৪ উইকেটের ব্যবধানে।
মিরপুরে টস হেরে নড়বড়ে শুরু চট্টগ্রামের। কেনার লুইসকে দ্রুত বিদায় করেন নাইম। প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি আফিফ। আস্থার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ সাব্বির। উইল জ্যাকসকে ১৬ রানে থামান জ্যাকব লিনটট। অধিনায়ক মিরাজও বিপর্যয় কাটাতে পারেননি। চাপ বাড়িয়ে গেছেন শামীম। শেষদিকে বেনি হাওয়েলের ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে ১২৫ রানের পুঁজি পায় চট্টগ্রাম।
জবাবে, শুরুতেই নাজমুল শান্তকে হারায় বরিশাল। তিনে নামা সাকিবও বেশিদূর যেতে পারেননি। দলীয় সর্বোচ্চ ৩৯ রান করে সৈকত আলীও ফিরে যান। ব্রাভো ও জিয়ার ব্যাটে এক ওভার বাকি থাকতেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায় সাকিবের দল।
সাকিবদের জন্য লক্ষ্যটা হাতের নাগালেই ছিল। জিততে হলে করতে হতো মাত্র ১২৬ রান। আধুনিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটা মামুলি লক্ষ্যই বলা চলে।
চট্টগ্রামের দেয়া সহজ লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বিপদে পড়ে সাকিবরা। নাসুমের প্রথম ওভার বরিশাল ফরচুনের দুই উদ্বোধনী ব্যাটার সৈকত আলি এবং নাজমুল হাসান শান্ত মিলে কোনোরকমে পার করতে পারলেও দ্বিতীয় ওভারেই মাত্র ১ রান করে কাটা পড়েন শান্ত।
শান্তকে আউট করার পর মিরাজের দ্বিতীয় শিকার বরিশাল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। অল্প পুঁজি নিয়েও মিরাজের জোড়া আঘাতে ম্যাচে ফিরে চট্টলার দলটি।
এবারের আসরে তরুণতুর্কিদের মধ্যে পাদপ্রদীপের আলোতেই ছিলেন সাকিবের বরিশালের হয়ে খেলা তৌহিত হৃদয়। ১৭ বলে ১৬ রানের না ওয়ানডে না টেস্ট দুটোর মাঝামাঝি মানের ইনিংস খেলে বিদায় নিয়েছেন এ ব্যাটার।
১৫তম ওভারে বল করতে এসে দুই দুইটি উইকেট পেয়েছেন মিরাজ। এ নিয়ে ম্যাচে এখন পর্যন্ত তার উইকেট সংখ্যা চারটি।
বরিশালের একপ্রান্তের ব্যাটারদের আসা-যাওয়ার মিছিলে অন্য প্রান্ত আগলে রাখা সৈকতকে ৩৫ বলে ৩৯ রানের সময়োপযোগী ইনিংস খেলার পর আউট করার পর ফেরান ভয়ংকর হয়ে উঠা ইরফান শুক্কুরকেও। এরপর আফিফের রানআউটের শিকার হন সালমান। সবমিলিয়ে চট্টলার জন্য ইমফ্যাক্টফুল ওভার শেষে খাদের কিনারায় ছিল বরিশাল।
তবে শেষ দিকে ব্যাট করতে নামা ডোয়াইন ব্রাভোদের কল্যাণে জয় পেতে বেগ পেতে হয়নি সাকিবের।
ইনিংসের প্রথম ওভারের প্রথম বলেই নাইম হাসানের বল বাউন্ডারি ছাড়া করে ঝড় তোলার আভাস দিয়েছিলেন ক্যারিবীয় ব্যাটিং দানব কেনার লুইস। কিন্তু দ্বিতীয় বলেই নাজমুল হাসান শান্তর কাছে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার।
আফিফ আর জ্যাকস মিলে চার-ছক্কায় এক ওভারেই তুলে নেন ১৩ রান। চতুর্থ ওভারে বল হাতে তুলে নেন ক্যারিবীয় তারকা পেসার আলজারি জোসেফ। নিজের স্পেলের প্রথম বলেই ফেরান আগ্রাসী হয়ে ওঠা আফিফ হোসেনকে।
দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা একসময়ের সম্ভাবনাময়ী মারকুটে ব্যাটার সাব্বির রহমান জোসেফকে দুই চার মেরে স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে ইনিংস শুরু করলেও শেষটা করতে পারলেন না। পরের ওভারেই সাকিবের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে মাঠ ছাড়েন।
৮ ওভার শেষে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৩ রান। ইনিংসের নবম ওভারেই ইংলিশ বোলার লিন্টফের বলে ফিরে যান তারই স্বদেশি ব্যাটার উইল জ্যাকস।
নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও রানের চাকাকেও সচল রাখতে ব্যর্থ হন চট্টলার ব্যাটাররা।
২৩ বলে ১৪ রান করে জোসেফকে দ্বিতীয় উইকেট উপহার দেন শামীম পাটোয়ারী। এরপর নাইম ইসলাম আর বিনি হাওয়েল মিলে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়া ইনিংসটাকে কিছুটা মেরামতের চেষ্টা চালান। নাইম আউট হওয়ার পর হাওয়েলের ২০ বলে ৪১ রানের ক্যামিওতে শেষ পর্যন্ত ১২৫ রান পেরোয় চট্টগ্রাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর : টস : ফরচুন বরিশাল
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স : ১২৫/৮ (২০ ওভার); হাওয়েল ৪১, জ্যাকস ১৬, নাঈম ইসলাম ১৫, শামীম ১৪, জোসেফ ৩২/৩ নাঈম ২৫/২, সাকিব ৯/১।
ফরচুন বরিশাল : ১২৬/৬ (১৮.৪ ওভার); সৈকত ৩৯, জিয়া ১৯*, শুক্কুর ১৬, হৃদয় ১৬, ব্রাভো ১২*, মিরাজ ১৬/৪, মুগ্ধ ২৫/১।
ফল : ফরচুন বরিশাল ৪ উইকেটে জয়ী।